সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চাচ্ছেন? কিন্তু লোন পেতে কি কি লাগে এবং সিটি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় জানেন না? তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্যই।
সিটি ব্যাংক সহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকেই লোন দিয়ে থাকে। আপনার টাকার প্রয়োজন হলে ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। তবে, লোন নিতে চাইলে বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হবে। ব্যাংকভেদে ভিন্ন রকম পদ্ধতি হয়ে থাকে।
তবে, যারা সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিতে ইচ্ছুক, তারা লোন নিতে চাইলে কি কি কাগজপত্র লাগবে এবং লোন নেয়ার নিয়ম জানতে পারবেন এই পোস্টে। তো চলুন, সিটি ব্যাংক থেকে লোন কিভাবে নিতে হয় এসব বিষয় বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
Table of Contents
সিটি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়
সিটি ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়। এছাড়া, আপনি যদি জামানতের বিপরীতে লোন নিতে চান, তাহলে জামানত রাখতে হবে। এছাড়া, বেশ কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করার মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন।
সিটি ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চাইলে প্রথমেই সিটি ব্যাংকের যেকোনো একটি শাখায় যেতে হবে। এরপর, ব্যাংকে কর্মরত কাউকে জানাতে হবে যে আপনি লোন নিতে ইচ্ছুক। অতঃপর, তারা আপনার লোন নেয়ার উদ্দেশ্য, কত টাকা লোন নিতে ইচ্ছুক ইত্যাদি তথ্য জানতে চাইবে।
এসব তথ্য দেয়ার পাশাপাশি তাদের দেয়া ফরম পূরণ করে ফরমের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। তাহলে, তারা আপনার লোনের আবেদন যাচাই করে লোন দিবে। সিটি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার জন্য কি কি লাগে তা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।
সিটি ব্যাংক লোন পেতে কি কি লাগে
সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চাইলে তাদের বিভিন্ন শর্ত মানতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চাইলে কী কী কাগজপত্র লাগবে তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।
- ভোটার আইডি কার্ড/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- নমিনির ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
- নমিনির সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য ইনস্ট্যান্ট ডিপোজিট এর টাকা
- ইনকাম সোর্সের প্রমাণপত্র
- একটি সচল মোবাইল নাম্বার
- ঠিকানা যাচাই করার জন ইউটিলিটি বিলের কপি
এসব ডকুমেন্ট ছাড়াও সিটি ব্যাংক থেকে আরও অনেক তথ্য এবং ডকুমেন্ট চাইতে পারে। আপনি যখন লোন নেয়ার জন্য সিটি ব্যাংকে যাবেন, তখন কী কী লাগবে তা বিস্তারিত জানিয়ে দিবে। এই ডকুমেন্টগুলো লোন নেয়ার ফরম পূরণ করার পর ফরমের সাথে জমা দিতে হবে।
সিটি ব্যাংকে যদি পূর্বে থেকে একাউণ্ট করা থাকে, তাহলে উক্ত একাউন্টেই লোন নিতে পারবেন। তবে, আপনার যদি একাউন্ট করা না থাকে, তবে একটি একাউন্ট করার পর লোন নিতে হবে। এক্ষেত্রে, লোন নেয়ার সময় আপনাকে একটি একাউন্ট করতে হবে।
আরও পড়ুন —
সিটি ব্যাংক লোন পেতে করণীয়
সিটি ব্যাংক লোন পেতে চাইলে করণীয় কিছু কাজ আছে। আপনি যদি সিটি ব্যাংকের গ্রাহক হয়ে থাকে, তবে আপনার একাউন্টে সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। আর যদি আগে থেকে সিটি ব্যাংকে একাউন্ট না থাকে, তবে নতুন করে একাউন্ট করার পর লোন নিতে হবে।
সিটি ব্যাংক থেকে লোন পেতে চাইলে আপনার লোনের টাকার পরিমাণের উপর জামানত চাইতে পারে বা জামানত ছাড়া লোন দিতে পারে। টাকার পরিমাণ কম হলে জামানত ছাড়া লোন দিয়ে থাকে। তবে, বেশি পরিমাণে লোন নিতে চাইলে জামানত দিতে হয়।
এজন্য, জমি/বাসা-বাড়ি বা স্থায়ী যেকোনো সম্পদ জামানত হিসেবে জমা রাখতে হয়। স্বর্ণালংকার সহ অন্যান্য সম্পদ জামানত রেখে লোন নিতে পারবেন।
সিটি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার নিয়ম
প্রথমেই সিটি ব্যাংকের যেকোনো একটি শাখায় যেতে হবে। এরপর, উক্ত শাখায় কর্মরত কাউকে জানাতে হবে যে, আপনি লোন নিতে চাচ্ছেন। আপনার পুরাতন একাউন্ট আছে কিনা তা জানতে চাওয়া হবে। যদি একাউন্ট থাকে, তবে একাউন্টের নাম্বার জানাতে হবে।
যদি আপনার পূর্বের একাউন্ট না থাকে, তাহলে সিটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুসরণ করে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে। অতঃপর, তারা যেসব ডকুমেন্ট চাইবে সেসব জমা দেয়ার মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন।
বেশি পরিমাণে লোন নিতে চাইলে সিটি ব্যাংকে যোগাযোগ করতে হবে। বড় ধরনের লোন দেয়ার জন্য তারা জামানত নিয়ে থাকে। তাই, জমি অথবা বাড়ি কিংবা অন্য স্থায়ী সম্পদ জামানত রাখার মাধ্যমে লোন নিতে পারবেন। তবে, লোনের পরিমাণ অল্প হলে জামানত লাগেনা।
সিটি ব্যাংকে একাউন্ট না থাকলে একাউন্ট করতে যা যা লাগে তা সাথে নিয়ে যেতে হবে। এরপর, সেখানে একাউন্ট করে লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চাইলে তাদের দেয়া ফরম পূরণ করতে হবে। উক্ত ফরমে আপনার সকল তথ্য উল্লেখ করতে হবে। লোন নেয়ার ফরমটি সুন্দরভাবে পূরণ করে ফরমের সাথে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো যেমন – ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, ছবি, নমিনির তথ্য, ইউটিলিটি বিলের কপি সহ সবকিছু জমা দিতে হবে।
এরপর, সিটি ব্যাংক থেকে আপনার লোনের আবেদনটি যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে। যদি তাদের মনে হয় আপনি তাদের লোন নিতে সামর্থ্যবান, তাহলে তারা আপনাকে লোন দিবে। এভাবে করে সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন।
আরও পড়ুন —
পার্সোনাল লোন নিতে কি কি লাগে?
সিটি ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নিতে কি কি লাগবে তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। এই ডকুমেন্টগুলো সাহায্যে সিটি ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নিতে পারবেন।
- ভোটার আইডি কার্ড/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি
- ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট
- আয়ের প্রমাণপত্র
- ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে ইউটিলিটি বিলের কপি
- চাকুরীজীবী হলে চাকরির নিয়োগপত্র
- ব্যবসায়ী হলে ব্যবসার ডকুমেন্ট
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো হলে সিটি ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নিতে পারবেন। তবে, সিটি ব্যাংক থেকে আরও কিছু ডকুমেন্ট চাইতে পারে। এজন্য, সিটি ব্যাংকে যোগাযোগ করে তাদেরকে জানাতে হবে যে আপনি পার্সোনাল লোন নিতে চান। তাহলে, তারা বিস্তারিত একটি তালিকা দিবে।
বিকাশের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে লোন
বিকাশের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। এজন্য, আপনার বিকাশ একাউন্ট দিয়ে ভালো পরিমাণ লেনদেন করতে হবে। প্রতিদিন বেশি পরিমাণে লেনেদেন করলে বিকাশ অ্যাপের ভিতর থেকে লোন নিতে পারবেন।
বিকাশ থেকে সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে লোন দেয়া হয়। আপনি যদিও বিকাশের ভিতর থেকে লোন পাচ্ছেন, কিন্তু এই লোনের টাকা দিচ্ছে সিটি ব্যাংক। তাই, আপনি সিটি ব্যাংকে সরাসরি লোনের জন্য আবেদন না করে বিকাশের মাধ্যমেও লোন নিতে পারবেন।
তবে, এজন্য অবশ্যই আপনার বিকাশ একাউন্টে লেনদেনের পরিমাণ বেশি হতে হবে। নয়তো, বিকাশ থেকে আপনাকে লোন দেয়া হবেনা। তাই, যারা সিটি ব্যাংক থেকে লোন পেতে ইচ্ছুক, তারা সরাসরি সিটি ব্যাংকে লোনের জন্য আবেদন করুন অথবা বিকাশের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিন।
শেষ কথা
আজকের এই পোস্টে সিটি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার উপায়, সিটি ব্যাংক থেকে লোন পেতে কি কি লাগে এবং বিকাশের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে লোন নেয়ার নিয়ম শেয়ার করেছি। যারা লোন নিতে চাচ্ছেন কিন্তু নিয়ম জানেন না, তাদের জন্য এই পোস্টটি অনেক সহায়ক হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এছাড়া, আমাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ব্যাংকের একাউন্ট চেক করার নিয়ম, একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং ব্যাংকিং সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করা হয়ে থাকে। ব্যাংকিং, ব্যাংক লোন এবং মোবাইল ব্যাংকিং সংক্রান্ত তথ্য জানতে ওয়েবসাইটটি সম্পূর্ণ ঘুরে দেখার আমন্ত্রণ রইলো।